ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ০৭ বছরের শিশুকে নির্মমভাবে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার চার্জশিট ও ওয়ারেন্টভুক্ত প্রধান আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদ (৫৫)’কে ১১ মাস পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। ভুক্তভোগী ধর্ষিতা শিশু ভিকটিম তার মায়ের সাথে গত ১৯ জুলাই ২০২১ ইং নানার বাড়ী চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানাধীন বাহারছড়া এলাকায় বেড়াতে যায়।
নানার বাড়িতে পৌছানোর পর ঐদিন দুপুরে শিশুটি খেলার জন্য বাড়ির বাহির হলে তখন অভিযুক্ত আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদ শিশুটিকে একা পেয়ে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে তার বসত ঘরে নিয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিমের মা তার মেয়েকে বেশ কিছুক্ষন আশে পাশে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি করে এবং ভিকটিমকে নাম ধরে ডাকতে থাকে। ভিকটিম তার মায়ের ডাক শুনে অভিযুক্ত আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদের বসত ঘরের দরজায় অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় এসে কান্নাকাটি করতে থাকে।
মেয়ের এমন অবস্থা দেখে ভিকটিমের মা আসামীর বসত ঘরে প্রবেশ করলে ততক্ষণে ধর্ষণকারী পাষন্ড আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদ দরজা দিয়ে বের হয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আশে পাশের আত্বীয় স্বজনদের সহায়তায় ধর্ষিতা শিশু ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করানো হয়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/৩), এর ৯(১), ধারায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে যার নং-২৮, তারিখ-২০/০৭/২০২১ ইং.। উল্লেখ্য যে, অভিযুক্ত ধর্ষণকারী পাষন্ড আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদ শিশুটিকে ধর্ষণ করেও ক্ষান্ত হয়নি। তার নামে উল্লেখিত ধর্ষণ মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে সে নিজ এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় পলাতক থেকে ভিকটিমের বাবাকে মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল।
উক্ত ধর্ষনকারীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, ধর্ষণকারী পাষন্ড আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদ চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ তুলাতলী এলাকায় আত্মগোপন করে আছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৬ জুন ২০২২ইং তারিখ ১৬৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ রশিদ আহাম্মদ (৫৫), পিতা-মৃত সাহাব মিয়া প্রকাশ ছাম মিয়া, সাং-বাহারছড়া, থানা- বাঁশখালী, জেলা- চট্টগ্রাম‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরে উল্লেখিত ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করে। উক্ত চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ধর্ষণ মামলার মেডিক্যাল প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন এবং বিজ্ঞ আদালত গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করেন। এছাড়াও মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী ভিকটিমের শরীরে ধর্ষণের যথেষ্ট আলামত পাওয়া যায়।গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্থান্তর করা হয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।